“আয়ারল্যান্ড আওয়ামীলীগের মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন”



গত ৪-ঠা এপ্রিল আয়ারল্যান্ড আওয়ামীলীগের উদ্যোগে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়ারল্যান্ড আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি জালাল আহমেদ ভুইয়ার সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মেদ আবুল হোসেন সোহেলের পরিচালনায় একটি আলোচনা সভা আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনের এরোমা রেস্তোরাতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন আয়ারল্যান্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব জসিমুদ্দিন আহমেদ ও প্রধান বক্তা ছিলেন ডাবলিন আওয়ামীলীগের আহবায়ক জনাব ফিরোজ হোসেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রক্কালে ২৫ শে মার্চ কালো রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে নিষ্ঠুর ভাবে নিহত বাঙালিদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার পর অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা জনাব ফিরোজ হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, ২৬ শে মার্চ দিনটি বাঙালিদের জন্য একটি আবেগময় ও আনন্দ বেদনার দিন। এই দিনটি পাওয়ার জন্য বাঙালিকে দুইশত বছরের অধিক সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। যদিও ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণার সময়কালটা খুব সুখকর ছিলনা কারণ বাঙালিকে যে আর দাবিয়ে রাখা যাবে না তা বুঝতে পেরে পাকিস্থানী হানাদার বাহিনী অত্যাধুনিক অস্রসহ নিরস্র বাঙালিদের উপর ঝাপিয়ে পরে নির্বিচারে গণহত্যা শুরু করে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু জনগনের কাতারে থেকে জনগণকে মুক্তির সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করে এই দিন স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এই ঘোষণার চূড়ান্তে পর্বে বাঙালিরা ১৯৭১ সালের ১৬-ই ডিসেম্বর বাঙালিরা দীর্ঘ ৯ মাস পর প্রিয় স্বাধীনতাকে ছিনিয়ে আনে।
সাংগঠনিক সম্পাদক অলক সরকার তার বক্তব্যে বলেন, জন নেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের বার্ষিক প্রবৃদ্বির হার ৭ এর উপরে ধরা হয়েছে, যা আমরা ইউরোপের কোনো দেশে এই মুহুর্তে কল্পনা করতে পারি না। এই হার অব্যাহত থাকলে আমরা ১৯২১ সালের আগেই মধ্যম সারির দেশের মর্যাদা পাবো। কিন্তু বাংলাদেশের বিরোধী শক্তি ও পাকিস্থান নামক রাষ্ট্রটি চক্রান্ত করে যাচ্ছে। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে প্রাক্তন প্রধান বিরোধী দল বিএনপির উপর পাকিস্থানীদের প্রেতাত্মা ভর করেছে। তাই তারা একবার দেশের উন্নয়ন বিরোধী বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে আবার মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী বক্তব্য দিচ্ছে। তিনি বলেন বিএনপির রাজনৈতিক ভিত্তি হচ্ছে মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্র। তাই তারা ২৭ শে মার্চ কালুর ঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠকারী(Reader) এক মেজর কে স্বাধীনতার ঘোষক বলে। ওই মেজর যদি স্বাধীনতার ঘোষক হতো তাহলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস হতো ২৭ শে মার্চ, ২৬ শে মার্চ নয় এবং ওই মেজর জীবিত থাকাকালীন সময়েও তা বলার বা নিজে ঘোষক হওয়ার দু:সাহস দেখাননি। এই সহজ সমীকরণ বা সাধারণ জ্ঞানটি না বোঝার কারণে তিনি বিএনপির কর্মীদের গণিত চর্চার উপর জোর দেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক জসিমউদ্দিন আহমেদ বলেন, যেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেয়েছিল তা থেকে অনেক ক্ষেত্রেই আমরা আজ বিচ্যুত। বাংলাদেশে উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তি এখনো বিদ্যমান। এরা নানাভাবে আমাদের সমাজ , ধর্ম ও জনজীবন কে কুলষিত করছে। হেফাজত ইসলাম সেরকমই একটি শক্তি তাই এদেরকে রুখে দাড়াতে হবে। অসাম্প্রদায়িক, সাম্য ও নীতি নৈতিকতার ভিত্তিতে সমাজ গড়ে তুলতে হলে ৭২ এর সংবিধানে ফিরে যেতে হবে। এসব নিয়ে এখন লড়াই করার প্রয়োজন ছিল না যদি বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকত তাহলে আমাদের সেই রূপকথার সমাজ এখন থাকত। ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ বাংলাদেশে পাকিস্থানী বাহিনীর নির্বিচারে গহত্যার জন্য তিনি সমাবেশ থেকে ২৬ শে মার্চকে বিশ্ব গণহত্যা দিবস ঘোষণার দাবি তোলেন।

সভাপতির বক্তব্যে জালাল আহমেদ ভুইয়া বলেন, স্বাধীনতার ৪৫ বছর পার হয়ে গেল অথচ জন নেত্রী শেখ হাসিনার আগের সরকার গুলো বাংলাদেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য তেমন কিছুই করেনি। বর্তমানের শেখ হাসিনার সরকার অত্যন্ত গতিশীল একটি সরকার। দেশের উন্নয়নে বিরামহীন ভাবে কাজ করে যাচ্ছে জননেত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে আগামীর বাংলাদেশ রোল মডেল দেশ হিসেবে বিশ্ব দরবারে দাড়াবে। স্থায়ী , সুস্থ ও সুষ্ঠ বাংলাদেশ গড়তে হলে উন্নয়নের বিকল্প নেই। তিনি সকলকে শেখ হাসিনার মত দেশের জন্য কাজ করার আহবান জানান।

অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত হতে না পেরে দুঃখপ্রকাশ করে টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আয়ারল্যান্ড আওয়ামীলীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট জালাল আহমেদ ভূঁইয়া বলেন," ঘাতকেরা বঙ্গবন্ধুকে কেড়ে নিলেও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে আমাদের মাঝ থেকে কেড়ে নিতে পারেনি। তিনি শোক দিবসের অনুষ্ঠানে সবাইকে আসার জন্য ধন্যবাদ জানান।

উপরোক্ত বক্তাগণ ছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আয়ারল্যান্ড আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ তপু শাহাদাত, সমীর কুমার ধর, এম আর নয়ন,মৃদুল কান্তি পাল, হেলাল উদ্দিন। বক্তারা সবাই আগামী দিনের বাংলাদেশের সুখী সমৃদ্ব ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশের কথা বলেন। অনুষ্ঠান শেষে সবার জন্য প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়।