নজরুল ইসলাম সাহেব, আমি জেলে যেতে চাই


ইউরোপিয়ান আওয়ামীলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম সম্প্রতি ফেসবুক ও পত্রিকায় তার সমালোচনাকারীদের প্রতি বিদ্রুপ, শ্লাঘা ও বিভিন্ন মামলা হামলার হুমকি দিয়েছেন। অত্যন্ত যুক্তি সঙ্গত ভাবে তিনি অথবা তার পরিবার কোনো ধরণের হামলার বিষয় উপলব্ধি করলে বা নিজেকে অথবা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করলে তিনি আইনের আশ্রয় নিতেই পারেন। কিছু কাল আগে জননেত্রী শেখ হাসিনা স্পেন সফরে আসলে তিনি সেখানে বডিগার্ড নিয়ে চলাফেরাও করেছেন অর্থাৎ তিনি নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শংকিত ছিলেন। যদিও তার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার মতো কোনো পারিপার্শ্বিক উপকরণ ছিল না বা কেউ ওনাকে হুমকিও প্রদান করেননি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন অন-লাইন সংবাদ মাধ্যম ঘেটে জানা গেলো ওনার সমালোচনাকারীদের প্রায় সবাই-ই আওয়ামীলীগের কর্মী। এই কর্মীদের মধ্যে অনেকেই বর্ষীয়ান পোড় খাওয়া আওয়ামীলীগের রাজনীতিবিদ। এদের অনেকের হাত ধরেই ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং জানা গেলো নজরুল ইসলাম কে ঘিরে তাদের এই সমালোচনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই সীমাবদ্ধ।

প্রশ্ন হচ্ছে কেন নজরুল ইসলাম এরকম সমালোচনার সম্মুখীন হচ্ছেন? তিনি এমন কি-বা করলেন যে আওয়ামীলীগের কর্মীরা তার পিছু নিয়েছে?

বিগত কয়েক মাস ধরে ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলামের দলীয় কর্মকান্ড পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে তিনি বিভিন্ন দেশে আওয়ামীলীগের সেসব কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন সেখানে তিনি বিএনপি জামায়াতের লোকজনদেরকে দলে ঠাঁই দিয়েছেন এই সংক্রান্ত সকল তথ্য ও প্রমান আমাদের কাছে রয়েছে।

ওনার এই অপকর্ম থেকে আয়ারল্যান্ড আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক কমিটিও বাদ যায়নি। বিএনপি জামায়েত নিয়ে গঠিত আয়ারল্যান্ড আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক কমিটি মেয়াদউত্তীর্ণ হয়ে গেলেও তিনি আওয়ামীলীগের গঠনতন্ত্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে, নিজের দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে অসৎ উদ্দেশ্য সম্পাদনে তা ক্রিয়াশীল রেখেছেন।

ঠিক এই ধরণের বা এর থেকেও অনেক গুরুতর অপকর্ম তিনি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে করেছেন, এসব করতে গিয়ে তিনি দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন আর এইসব কারণেই তিনি প্রকৃত আওয়ামীলীগের কর্মীদের কাছে ক্ষোভের কারণ হয়ে উঠছেন।

বেশ কিছুদিন আগে অস্ট্রিয়া আওয়ামীলীগের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ওনাকে পূর্বের ফারুক হোসেন নামে অভিহিত করে নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে তার গ্রামের বাড়ির ঠিকানা সহ নরসিংদীর বঙ্গবন্ধুর এক খুনির বাড়িতে লজিং মাস্টার থাকার গুরুতর অভিযোগ উঠে। আরো অভিযোগ উঠে তিনি ছাত্রাবস্থায় কখনোই আওয়ামীলীগ বা যুবলীগ বা ছাত্রলীগ সংগঠন সমূহের সাথে যুক্ত ছিল না বরং তিনি ছাত্রাবস্থায় ফ্রিডম পার্টির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তার এক ভাই তার নিজের এলাকায় বিএনপির কাউন্সিলর নির্বাচন করে হেরে যায়।

এইসব বিষয় নিয়ে ইউরোপ আওয়ামীলীগের কর্মীরা সমালোচনা শুরু করলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের একটির-ও খণ্ডন না করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আইনের আশ্রয় নেওয়ার হুমকি দিয়ে বসেন। তিনি হয়তো আওয়ামীলীগের কর্মীদের তথা আওয়ামীলীগের ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞাত নন, তিনি জানেন না আওয়ামীলীগের বিনির্মানের ইতিহাস এই দলের কর্মীরাই সৃষ্টি করেছে। এই জন্য কর্মীরা প্রাণ দিয়েছে, জেল জুলুম সহ নির্যাতন সহ্য করেছে। তিনি কিভাবে ভাবলেন, সেই দলের কর্মীরা তার এই হুংকারে পিছু হটবে, তার এই অন্তঃসারশূন্য হুংকারের ভয়ে ভীত হবে!

সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য আওয়ামীলীগের অনেক কর্মী এখনো কাজ করে যাচ্ছেন। কিছুদিন আগে যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক সুশান্ত দাশ গুপ্ত সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য হবিগঞ্জের কোনো এক স্থানীয় এমপির রোষানলে পড়ে জেলে গিয়েছেন এবং জামিনে বেরিয়ে এসেছেন, কিন্তু যেই সত্যের জন্য তিনি লড়াই করেছিলেন সেটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় এমপির আস্থাভাজন অন্য দল থেকে আওয়ামীলীগে আসা উপজেলা চেয়ারম্যান ত্রাণ চুরির দায়ে দল থেকে বহিস্কৃত হয়ে এখন তদন্ত দলের মুখোমুখি।

বিএনপি জামায়েত নিয়ে আওয়ামীলীগ গঠন করা নজরুল সাহেবের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বেশিরভাগ সমূহ 'প্রতিষ্ঠিত সত্য'। তাই আমার মনে হয় ওনার সেই সৎ সাহস নেই যে কাউর বিরুদ্ধে তিনি আইনি পদক্ষেপ নেবেন।

তাই নজরুল সাহেব, যদি আপনি একান্তই আইনি পদক্ষেপ নিতে চান তাহলে আমাকে দিয়েই শুরু করুন। আমি জেলে গেলে এইসব অভিযোগের চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু হবে, আপনার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ গুলোর সত্যতা প্রতিষ্ঠিত হবে, আপনার অপকর্মগুলো জনসম্মুখে প্রকাশিত হবে, এতে আপনার আগামী দিনের সম্ভাব্য অপকর্মগুলোর হাত থেকে ইউরোপিয়ান আওয়ামীলীগ নিষ্কৃতি পাবে। সর্বোপরি ইউরোপিয়ান আওয়ামীলীগ বা আওয়ামীলীগ বাঁচবে। তাই আমি আপনার বিভিন্ন অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে জেলে যেতে চাই আর এইজন্য আমি অবশ্যই গর্ব অনুভব করবো।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: আমি জননেত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। একমাত্র আপনি বোঝেন এবং জানেন কর্মীদের দুঃখ কষ্ট। আপনার মমতার পরশ থেকে বাদ যায়নি কোনো কর্মী। তাই এইবার দয়া করে ইউরোপিয়ান আওয়ামীলীগের দিকে সু-নজর দিন।




আরো বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত আয়ারল্যান্ড আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটি নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সমূহ:

দৈনিক সংবাদ : আওয়ামীলীগই যেন আওয়ামীলীগের কাটা হয়ে না দাঁড়ায়
দৈনিক ইত্তেফাক : আয়ারল্যান্ড আলীগের আহ্বায়ক কমিটিতে বিএনপি জামায়াতের অনুপ্রবেশ নিয়ে ক্ষোভ
bdnews24.com: আয়ারল্যান্ড আ.লীগের কমিটিতে বিএনপি-জামায়াত ঢোকানোর অভিযোগ
bdnews24.com: টাকা খেয়ে’ স্পেন আওয়ামীলীগের কমিটি গঠনের অভিযোগ
আমাদের প্রতিদিন: আয়ারল্যান্ড আ’লীগের কমিটি নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে অসন্তোষ
আয়ারল্যান্ড আওয়ামীলীগ : আয়ারল্যান্ড আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ
দৈনিক অবজার্ভার : সর্ব ইউরোপ আওয়ামী লীগের সভাপতির গোপনীয় তথ্য ফাঁস, প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আর্কষন

ফেসবুকে নজরুল মুজিবদেরকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় : ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখুন
অলক সরকার , আক্তার হোসেন আতা, মোহাম্মদ ইফতেখার আলম (ডিসেম্বর) , বাবলু মিয়া জসিম



Image

লেখক পরিচিতি

অলক সরকার
আওয়ামীলীগ কর্মী
আয়ারল্যান্ড আওয়ামীলীগ
আয়ারল্যান্ড।